মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ থানাধীন পৌর শহর ভানুগাছ বাজারের মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিক পরিবারের সদস্য আরাফাত মাহমুদ তপু অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১১ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে দুপুরে তপু বাজার থেকে হেঁটে ফেরার পথে হঠাৎ একটি গাড়ি তার পাশে থেমে যায়। গাড়ি থেকে দুজন ব্যক্তি নেমে এসে তাকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। অপহরণের সময় তার চোখ বেঁধে, হাত বেঁধে অজানা গন্তব্যে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে প্রায় ৪৮ ঘণ্টা একটি অন্ধকার কক্ষে আটকে রেখে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। তার ওপর লাঠি ও রড দিয়ে মারধর করা হয়, খাবার দেওয়া হয়নি এবং অল্প পানি দেওয়া হয়।
অপহরণের সময় অপহরণকারীরা তার সাংবাদিক, মানবাধিকার ও সমাজকর্মী বাবার ফোনে কল করে কর্মকান্ড বন্ধ করতে বলে। জানা যায়, তপুর বাবা একজন স্থানীয় সাংবাদিক, যিনি একটি অটোরিকশা চালকের রহস্যজনক মৃত্যুর বিষয়ে অনুসন্ধান করছিলেন। অপহরণকারীরা স্পষ্টভাবে বলে, তদন্ত বন্ধ না করলে তপুকে হত্যা করা হবে।
তপুকে মুক্তি দেওয়ার আগে অপহরণকারীরা একটি তিক্ত স্বাদযুক্ত তরল জোর করে খাওয়ায় এবং একটি ইনজেকশন প্রয়োগ করে, যার ফলে তপু অচেতন হয়ে পড়ে। পরে তাকে সিলেট শহরের বাইরে একটি ব্রিজের নিচে ফেলে রাখা হয়। স্থানীয় লোকজন তাকে মৃত ভেবে পড়ে থাকলেও পরে তিনি জীবিত বলে নিশ্চিত হয়ে হাসপাতালে নিয়ে যান।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, তপুকে ভর্তি করার সময় তিনি অজ্ঞান অবস্থায় ছিলেন। চিকিৎসকরা তার দেহে আঘাত, বিষক্রিয়ার লক্ষণ এবং তীব্র পানিশূন্যতা শনাক্ত করেন। তাকে স্যালাইন, অ্যান্টিটক্সিন ও ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং কয়েকদিন পর তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়।
এই ঘটনায় এখনো কোনো অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হয়নি এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়েও জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। তপুর পরিবার বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানায় যোগাযোগ করা হলে পুলিশ কর্মকর্তারা কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।